কালা যাদু বা ব্ল্যাক ম্যাজিক কী?

কাল যাদু সম্পর্কে জানতে চাই

Better Asked on May 22, 2021 in Solution.
Add Comment
  • 1 Answer(s)

    আপনি যদি স্রষ্টায় বিশ্বাসী হয়ে থাকেন, বিশেষভাবে, আপনি যদি আব্রাহামিক রিলিজিয়নে বিশ্বাসী হয়ে থাকেন, অর্থাৎ মুসলিম অথবা খৃস্টান অথবা ইহুদীধর্মে বিশ্বাসী হয়ে থাকেন (অথবা অন্য কোনো একেশ্বরবাদে) তাহলে আপনাকে যাদু-টোনায় বিশ্বাসী হতেই হবে। কারণ, আব্রাহামিক রিলিজিয়নে শয়তান বলে একটা সত্বার অস্তিত্ব আছে, আর এই যাদু-টোনার উৎস হল সেই শয়তান। আর যদি আপনি স্রষ্টায় অবিশ্বাসী হয়ে থাকেন, তাহলে এসব কথা আপনার কাছে অর্থহীন। আমি ইসলাম ধর্মের আলোকে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো।

    যাদু টোনা” বা black magic হল সেটাই, যেখানে শয়তানকে সন্তুষ্ট করার মাধ্যমে কোনো উদ্দেশ্য হাসিল করা হয়। হোক সেটা কাওকে বিপদে ফেলা বা নিজে কোনো বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়া বা নিজের কোনো অর্জন হাসিল করা। অঞ্চলভেদে এই প্র্যাকটিসের নাম বিভিন্ন হয়ে থাকে, যেমন ভুডু (voodoo), তন্ত্র-মন্ত্র, কুফরী কালাম, বাণ মারা ইত্যাদি। আব্রাহামিক ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী, যাদু-টোনা বা বাণ মারা সত্যি মানুষের ক্ষতি করতে পারে এবং সত্যি মানুষের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে পারে বা কোনো আরাধ্য জিনিস এনে দিতে পারে।

    অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হয়, ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিমদের মাঝে “যাদু টোনা” জিনিসটার ইসলামী রূপ দেওয়া হয়েছে (আল্লাহ মাফ করুক), আর নাম দেওয়া হয়েছে “কবিরাজি“। অর্থাৎ এই অঞ্চলের সাধারণ মুসলিমদের ধারণা, বিভিন্ন পীর-ফকির-বাবা-ওঝা-কবিরাজ ইত্যাদি লোকেরা অনেক বড় সাধক, অনেক বড় আল্লাহওয়ালা (আল্লাহ মাফ করুক), তাদের কাছে জ্বীন আছে (আসলেই থাকে, কিন্তু জ্বীনগুলো হল শয়তানের অনুচর) সুতরাং তাদের কাছে কোনো সমস্যা নিয়ে গেলে তার সমাধান তারা দিয়ে দিতে পারে। সমস্যার সমাধান তারা আসলেই করে দিতে পারে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, ব্যাপার পুরো ১৮০ ডিগ্রী উল্টা। ইসলামের নামে প্রকৃতপক্ষে ইসলামবিরোধী কাজ চলছে, আল্লাহর নামে প্রকৃতপক্ষে শয়তানের কাজ চলছে। মানুষগুলো বুঝতেও পারছে না যে ঐসব সাধকের কাছে গিয়ে সমস্যা সমাধানের বিনিময়ে শয়তানের কাছে তারা তাদের ঈমান বিক্রি করে দিয়ে আসছে।

    শয়তান সাধক কবিরাজদের বা ওঝাদের চেনার উপায় বিস্তারিত জানতে একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও লেকচার21 শুনতে পারেন।

    ইসলাম ধর্মমতে, যেকোনো প্রকার যাদু টোনা বা এ ধরণের যেকোনো কাজ একেবারে হারাম। এ ধরণের কাজ যে করেছে অথবা কাওকে দিয়ে করিয়েছে, সে সন্দেহাতীতভাবে কাফির হয়ে গেছে, তাকে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে, তাওবাহ করে আবার নতুন করে কালিমা পড়ে মুসলিম হতে হবে। আর কেউ যাদু টোনা দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকলে সে ব্যাপারে ইসলামিক সমাধান হল “রুকইয়াহ“। এটি হল, কুরআনের আয়াত দ্বারা অসুস্থতা বা জ্বীন ঘটিত সমস্যা বা যাদু-টোনা থেকে মুক্তি পাওয়ার পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে প্রধানত সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তি বা অন্য কোনো ব্যক্তির কুরআনের আয়াত বিশেষ নিয়ম মেনে তিলাওয়াত করার (পাঠ করার) মাধ্যমে সমস্যা থেকে আল্লাহর সাহায্য দ্বারা মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করা হয়।

    আরেকটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে, যেকোনো ধরণের তাবিজ ঝুলানো শিরক, হারাম। এমনকী কুরআনের আয়াত লিখা তাবিজ হলেও। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। তাবিজ ঝুলানোর পক্ষে যেকোনো জায়গা থেকে যেকোনো প্রমাণ হাজির করা হোক না কেন, সে প্রমাণ মিথ্যা, এ কথাই চূড়ান্ত।

    And Allaah knows the best.

    Best Answered on May 22, 2021.
    Add Comment
  • Your Answer

    By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.